অ্যাম্বুলেন্স চালক চক্রের দৌরাত্ম্য,ঢাকা ধানমন্ডিতে ২৭ প্লাস হাসপাতালে রোগীরা জিম্মি করে অর্থ আদায়

কুমেক হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স চালক চক্রের দৌরাত্ম্য,ঢাকা ধানমন্ডিতে ২৭ প্লাস হাসপাতালে রোগীরা জিম্মি করে অর্থ আদায়ের অভিযোগ বিএম মহসিন ভিটে মাটি বিক্রি করে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে অসহায় ভুক্তভোগী পরিবারদের। কুমিল্লা সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল। অথচ এ হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা জিম্মি অ্যাম্বুলেন্স চক্রের কাছে। অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালটির কর্মচারী থেকে শুরু করে ঊর্ধ্বতন বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজন এ চক্রের সঙ্গে জড়িত। সম্প্রতি সরেজমিন এমন চিত্রই ধরা পড়ে এ প্রতিবেদকের কাছে। এ পরিস্থিতিতে হাসপাতালটির পরিচালক আজিজুর রহমান সিদ্দিকী জানিয়েছেন, তিনি এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন। নির্দিষ্ট করে অভিযোগ পেলে অ্যাম্বুলেন্স চক্রের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। তেমনি একটি ঘটনা ঘটেছে লালমাই উপজেলার জয়নগর এলাকার জহিরের পুত্র রাব্বী (২২)’র এর সাথে। এ ঘটনায় কোতয়ালী মডেল থানায় রাব্বীর আত্মীয় খোরশেদ বাদী হয়ে এ্যাম্বুলেন্স চালক হাসানকে আসামী করে কোতয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগটি তদন্ত করছেন চকবাজার ফাঁড়ির এসআই জীবন। তিনি জানান- বিষয়টি খুবই নেক্কারজনক ঘটনা। ঘটনাটি তদন্ত করছি। ঘটনার সূত্রে জানা যায়- কুমিল্লা লালমাই উপজেলার জয়নগর এলাকার জহিরের পুত্র রাব্বী (২২), খোরশেদ বোন খোদেজা, তালতো বোন সাদিয়া ২১ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ১২ ঘটিকায় লালমাই থানাধীন জয়নগর সার্কিনে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হলে সকলকে চিকিৎসার জন্য কুচাইতলী কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এরই মধ্যে রাব্বীর অবস্থা আশংকা জনক হলে হাসপাতালের ডাক্তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে এ্যাম্বুলেন্সের প্রয়োজন হলে আসামী হাসান এর চালিত (এ্যাম্বুলেন্স রেজিঃ নং-ঢাকামেট্রো-চ-৭১-১৪২১) এর মাধ্যমে রাব্বীকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পৌছে দিবে বলে ভাড়া ৫ হাজার টাকা সাব্যস্ত করে ও ভাড়াও নিয়ে যায় ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। ঢাকায় পৌছার পর দালাল চালক হাসান খোরশেদ ও তার আত্মীয় স্বজনকে বিভ্রান্ত ও ভুল বুঝিয়ে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে পৌঁছে না দিয়ে দালাল চালক হাসানে পূর্বে পরিচিত ও কমিশন প্রাপ্ত ঢাকা ধানমন্ডি ২৭ নম্বর রোড সাকিনের ২৭ প্লাস নামীয় হাসপাতালে নিয়া যায়। রাব্বির চিকিৎসার জন্য আইসিউও এর প্রয়োজন না হলেও দালাল হাসান এর যোগসাজসে আইসিইউতে ভর্তি করায়। এ সময় রোগীর আর্থিক অস্বচ্ছলতার কথা জানার পরও একদিনের চিকিৎসার নামে রোগী আত্মীয়ের কাছ থেকে এক লক্ষ তিষট্টি হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। যা গ্রামের লোকজনদের নিকট হাত পেতে ভিক্ষা হিসেবে সংগ্রহ করে এবং আরো টাকা দাবী করলে তা দিতে না পারায় রোগী রাব্বীকে হাসপাতাল থেকে জোর করে বের করে দেয়। পরে উপয়ান্তর না পেয়ে রোগী রাব্বিকে ঢাকা থেকে কুমিল্লা এনে টমছমব্রীজ পিপলস হাসপাতালের ভর্তি করানো হয়। এ বিষয়ে বাদী খোরশেদ জানান-এ্যাম্বুলেন্সের চালক হাসান আমাদেরকে বিভ্রান্ত করে একদিনের চিকিৎসার বিল বাবদ আমাদের নিকট থেকে উক্ত হাসপাতালের ডাক্তার মাধ্যমে ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে দালাল হাসান উক্ত টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা কমিশন নিয়োছে। বিষয়টি এ্যাম্বুলেন্স মালিক জাহিদ (০১৭৫৫-৯৫২৪৭৪) কে জানাইলে তিনি আমাদেরকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ প্রদান করে। হাসান জানতে পেরে বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে। আমরা বিবাদীর বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিলে আমাকে সহ আমার দালাল জহির ও আমাদের পরিবারের সদস্যদেরকে প্রানে হত্যা করবে বলেও হুমকি দিচ্ছে। তিনি আরও জানান- ঢাকার ওই হাসপাতালের সাথে কুমিল্লার অধিকাংশ এ্যাম্বুলেন্স চালকদের যোগসাজস রয়েছে এবং কমিশনের মাধ্যমে রোগীদের বিভ্রান্তি জড়িয়ে ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়। পরে ওই হসপিটালের ডাক্তাররা রোগীদের অঙ্গ প্রতঙ্গ খুলে অন্যত্র বিক্রিসহ রোগী ও আত্মীয় স্বজনদের মারধর করে। এছাড়াও অতিরিক্ত বিল নিচ্ছে ওই হাসপাতাল। কুমিল্লার এ্যাম্বলেন্স চালকদের কাছে জিম্মি কুমিল্লার অসহায় রোগীরা। ডা. আজিজর রহমান ছিদ্দিকী বলেন- কিন্তু কোনো বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স অন্যায় করলে আমার তেমন কিছু করার থাকে না। তবে হাসপাতাল এলাকায় তাদের প্রভাবের বিষয়টি আমার জানা আছে, আমরা এগুলোর বিরুদ্ধে শিগগির ব্যবস্থা নেব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *