নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত বর্ধিত এলাকার বাসিন্দারা ভোটে ফ্যাক্টর হতে পারেন

সিলেট সিটি নির্বাচন উপলক্ষ্যে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শুরু হয়েছে ২৭ এপ্রিল থেকে। গতকাল রবিবার বিকাল পর্যন্ত মেয়র পদে চার জন ও কাউন্সিলর পদে ২৬৭ জন মনোনয়নপত্র কিনেছেন। মেয়র পদপ্রার্থী তিন জন স্বতন্ত্র হিসেবে এবং এক জন দলীয় প্রতীকে কিনেছেন মনোনয়নপত্র। আর কাউন্সিলর পদে ২৬৭ জনের মধ্যে ১৪টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে (মহিলা কাউন্সিলর) ৫৯ জন এবং ৪২টি সাধারণ ওয়ার্ডে (পুরুষ কাউন্সিলর) ২০৮ জন মনোনয়নপত্র কিনেছেন। মেয়র পদে মনোনয়নপত্র কিনেছেন মোহাম্মদ আব্দুল হানিফ ওরফে কুটু, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান খান, সামছুন নুর তালুকদার ও হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান। এসব তথ্য রবিবার সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের মিডিয়া সেল (সিটি নির্বাচন) কর্মকর্তা সৈয়দ কামাল হোসেন। তবে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী প্রচারণা চালিয়ে গেলেও এখনো মনোনয়নপত্র কেনেননি।

অন্যদিকে সিলেট সিটি করপোরেশনের সীমানা সম্প্রসারণের দেড় বছর পরও সেখানে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার অভাব, রাস্তাঘাটের সংস্কার না হওয়া, পানীয় জলের সংকটসহ নানা সংকটের সমাধান হয়নি। নাগরিক সুযোগ-সুবিধা গড়ে না ওঠায় সেখানের বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বর্ধিত এলাকার ৪ লাখ লোক দুর্ভোগে আছেন। তবে এই দুর্ভোগ লাঘবে যার সহযোগিতা পাওয়া যাবে, তাকেই তারা মূল্যায়ন করবেন। এবারের সিসিক নির্বাচনে এই বর্ধিত এলাকার লোকজন ‘ফ্যাকটর’ হয়ে উঠতে পারেন। পূর্বের ২৭টি ওয়ার্ডের সঙ্গে যুক্ত হয় আরো ১৫টি ওয়ার্ড। মোট ৪২টি ওয়ার্ডে জনসংখ্যা প্রায় ৪ লাখ। এই ‘বর্ধিত এলাকার ভোটারদের মন যারা জয় করতে পারবেন, তাদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন হতে পারে’—এমন ধারণা নগরবাসীর। শুরুতে অবস্য সম্প্রসারিত এলাকায় চারটি আঞ্চলিক অফিস স্থাপন করে নগর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু উন্নয়নে কোনো অগ্রগতি নেই বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী বাসিন্দারা।

২০২১ সালের ৩১ আগস্ট বাংলাদেশ গেজেটের মাধ্যমে সিলেট সদর উপজেলার টুকের বাজার, খাদিমনগর, খাদিমপাড়া ও টুলটিকর এবং দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কুচাই, বরইকান্দি ও তেতলী ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্ত করে সীমানা সম্প্রসারণ করে সিলেট সিটি করপোরেশন। এতে আগের ২৭টি ওয়ার্ডের সঙ্গে যুক্ত হয় আরো ১৫টি ওয়ার্ড। এদিকে ইউনিয়ন থেকে নগরে প্রবেশের পর এই ৪ লাখ মানুষ পড়েছেন বিপাকে। স্বাভাবিক নিয়মে বন্ধ হয়েছে উপজেলা কিংবা ইউনিয়নের সেবা। তবে বাড়েনি ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা।

সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ঢাকার বিশেষজ্ঞ দলের মাধ্যমে বর্ধিত এলাকার চাহিদা নিরূপণ করে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট ডিপিপির মাধ্যমে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এসব পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে যাচাইবাছাই হওয়ার পর অনুমোদন হয়েছে। এখন সেই প্যাকেজ চাহিদাপত্র একনেকে যাওয়ার পথে।

নির্বাচিত হলে পরিকল্পিত স্মার্ট নগরী উপহার দেব—আনোয়ারুজ্জামান
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ‘আমি যদি নির্বাচিত হই, তাহলে পরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে একটি স্মার্ট নগরী উপহার দেব। নগরবাসীকে যাতে উন্নয়ন দুর্ভোগ পোহাতে না হয়, সে ব্যাপারে সচেতন থেকে কাজ করব। সারা দেশের মধ্যে সিলেটই হবে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন এবং বাসযোগ্য নগরী। গত শনিবার রাতে নগরীর মুসলিম সাহিত্য সংসদে শাহজালাল ব্লক আওয়ামী লীগ পরিবারের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *